। এর মধ্যে বিভিন্নভাবে নির্যাতনসহ যৌতুকের দাবি তোলা হলে বিচ্ছেদের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও থেকে ময়দানদিঘী আরাজি গাইঘাটা গ্রামে বাবার বাড়িতে চলে আসেন আসমা। এর মাঝে গত ২১/১২/২০২১ তারিখে বাবার বাড়িতে থাকতে থাকতে অবশেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন আসমা। পুলিশ তদন্ত করে মামলাটির সত্যতা পেয়ে চার্জশিট দাখিল করেন আদালতে।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) দুপুরে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) আদালতে দীর্ঘ শুনানি বসেন। শুনানিতে ও পুলিশের দেওয়া তদন্ত রিপোর্টে আদালতের বিচারক মতিউর রহমান স্পষ্ট বুঝেন স্বামীর বিরুদ্ধে আসমার অভিযোগগুলো অমূলক নয়। পরে স্ত্রী আসমাকে সঙ্গে নিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদা সম্পন্ন পণ্য কিনতে সময় বেঁধে দেন বিচারক। আর এর মাধ্যমে পুনরায় তাদের সম্পর্ক জুটি বাধায় আপাতত নিষ্পত্তি হয় মামলাটির।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসমার বিষয়টি নিয়ে বিচারক মতিউর রহমান তুলে ধরলে এক ভিন্ন সমাধানে সবার বাহবাহ পান তিনি।
আদালত সূত্রে জানা যায়, যৌতুকের কারণে স্বামী সাইফুল স্ত্রী আসমাকে নির্যাতন করেন। সংসার জীবনে তেল, সাবান, কাপড়-চোপড় কিনে দেন না ঠিকমতো। স্ত্রীকে বছরে দুটি শাড়ি কিনে দেন না সাইফুল। স্ত্রীর কাপড়-চোপড় তেল সাবান দিতেও কার্পণ্য তার। টাকা জমিয়ে জমি বন্ধক নেওয়ার ধান্দা সাইফুলের। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) জামিন নিতে বেশ কিছু টাকা নিয়ে আসেন সাইফুল। এর মধ্যে আদালত বিষয়টি বুঝতে পেরে শুনানির একপর্যায়ে তাকে টাকাগুলো বের করতে বলেন এবং প্রয়োজনীয় কাপড়-চোপড় কেনাকাটার জন্য সব টাকা তুলে দেওয়া হয় আসমার হাতে। পুরো দুই ঘণ্টা সময় দেওয়া হয় বাজার করার জন্য। আসমাকে সঙ্গে নিয়ে সাইফুল বাজারে যান। প্রায় দুই ঘণ্টা পর বাজার থেকে ফিরে আসেন তারা।
মোটামুটি সাড়ে তিন হাজার টাকার (প্যারাসুট নারিকেল তেল, তিব্বত টেলকম পাউডার, ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী ক্রিম, হাতের চুড়ি, থ্রি-পিস, সাবান, জুতা, বাচ্চাদের জন্য জামা ইত্যাদি) বাজার করেন আসমা। পরে আদালতেই স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকারনামায় সাইফুল বলে আর কখনো স্ত্রীকে কষ্ট দেবেন না, কিপটামোও করবে না কখনো। শেষে আসমা সাইফুলের হাত ধরে। তিন সন্তান আর স্বামীকে নিয়ে ফিরে যায় বাড়িতে।