নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের অন্যান্য সড়ক মহাসড়কের ক্রমাগত উন্নয়ন ও মেরামতের কাজ চললেও এখন পর্যন্ত সেই ছোঁয়া লাগেনি সাগরকান্দি বাজার থেকে কারিকর পাড়া অভিমুখী শিখা একাডেমি রোডে। পাবনার সুজানগর উপজেলার সাগরকান্দি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চরাঞ্চলেও যখন নতুন নতুন রাস্তা নির্মাণ, পাকা করন ও মেরামতের কাজ নিয়মিত হচ্ছে, তখন কেবল এই সড়কটিই পড়ে আছে লোকচক্ষুর আড়ালে। বিগত পনেরো বছরে সরকারি তহবিলের এক ঝাঁকা মাটিও পড়েনি। সমাজকল্যাণ সংস্থা নপম ও এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে মাটি ভরাট ও মেরামতের কাজ করা হয় নিয়মিত। গত বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির শিকার হলে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ব্যয় করে চলাচলের উপযোগী করেন তারা। সড়কটি সাগরকান্দি বাজার থেকে নেমে নপম কার্যালয়, শিখা একাডেমি, মুন্সী পাড়া জামে মসজিদ, সাগরকান্দি রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় হয়ে কারিকর পাড়ার মধ্য দিয়ে গোবিন্দপুর মধ্যপাড়া-শ্যামগঞ্জ হাট সংযোগ সড়কের সাথে মিশেছে। মুজিব বাঁধ হতে ১০০ ফুট দুরত্বে রয়েছে পাকিস্তান আমলের একটি ইটের ব্রিজ। ব্রিজের গোড়ায় বৃষ্টির ঢলে প্রায়ই ধ্বস নামে। মেরামত করতে হয় সেখানেও।
বৃষ্টিতে, বন্যায়, যান চলাচলে ক্রমাগত ক্ষয় হয় এই দের কিলোমিটারের এই মাটির রাস্তাটি। মাঝে মাঝে এলাকাবাসী নিজেদের উদ্যোগে মাটি ফেলে চলাচলের উপযোগী করে। অথচ এই সড়ক ঘিরে অন্তত দুই হাজার জনগণের বসবাস। সাগরকান্দির সমৃদ্ধ তাঁতীদের বসবাস ও শিল্পকারখানাও এখানেই।
এ বিষয়ে কবি ও সমাজ উন্নয়ন কর্মী রেজাউল করিম শেখ বলেন, ‘তাঁত শিল্প কারখানা, বিপুল সংখ্যক মানুষের যাতায়াত, এমনকি ইউনিয়নের বৃহত্তম শিক্ষালয় সাগরকান্দি রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীদেরও চলাচলের পথ এটি। অথচ এই সড়কের দিকে কারো কোনো খেয়াল নেই। বিগত অন্তত কুড়ি বছর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা সরকারি উদ্যোগে কোনো মেরামত ও পাকা করনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’ তিনি আরো বলেন, ‘২০১৫ সালে আমরা এই সড়ক ঘেঁষে নবজাগরণ পাঠক মেলা (নপম) এর কার্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিখা একাডেমি স্থাপন করি। এখানেই পাবনা জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়। বিগত বছরগুলোতে নপম ও এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে মাটি ভরাট ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হচ্ছে। গত ২০২০ ও ২০২১ সালেও বন্যার পরে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে বিধ্বস্ত রাস্তাটি দূরবর্তী নাজিরগঞ্জ থেকে ট্রাকে করে মাটি এনে মেরামত করা হয়। পরে রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ভাঙা সুরকি বিছিয়ে বালি ও কাদামাটি ঢাকা হয়।’
সম্প্রতি সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ক্যানালের পানি সেঁচের কাজে ব্যবহৃত পাইপের পানি পড়ে রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে উঠেছে। যার ফলে বিদ্যালয়গামী শিশু, এলাকাবাসী ও নবজাগরণ পাঠক মেলার পাঠকেরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যকে অবহিত করলেও সেঁচ কাজ বন্ধ হয়নি।